ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠিতে শহীদ মিনার ভাংচুরের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনের মামলায় জেলা যুবমহিলা লীগের নেত্রী কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার(২১অক্টোবর) বেলা বারোটার সময় পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক জেলা যুব মহিলা লীগের নেত্রী ফতেমা শরিফকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,ঝালকাঠি সুগন্ধ্যা পৌর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভাংচুরের ঘটনায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক শারমীন মৌসুমি কেকা ও শহর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুসহ ১৭ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনের ১৩ নম্বর মামলায় ফতেমা শরিফ ৩ নাম্বার আসামি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রীতা মন্ডল বাদি হয়ে গত (১৯ অক্টোবর)সোমবার ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ নালিশী মামলা দায়ের করেন (সিআর মামলা নং ২৬৪/২০)। বিচারক এ.এইচ.এম ইমরানুর রহমান ঝালকাঠি থানার ওসিকে বাদির অভিযোগ এফআইআর হিসেবে রেকর্ডের নির্দেশ দেন। ঝালকাঠি সদর থানায় মামলা নং-১৩ রেকর্ড করে উক্ত মামলায় তাকে আটক করা হয়েছে। মামলায় শারমিন মৌসুমি কেকা,আনিসুর রহমান তাপু ও ফতেমা শারিফ এজাহারে এই তিনজনের নাম উল্লেখ থাকলেও ১৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান শিক্ষক রীতা মন্ডল অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উত্তরপূর্ব কর্নারে রাস্ট্রীয় মর্যাদার প্রতীক ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরনে পাঁচলাখ টাকা ব্যায়ে একটি শহীদ মিনার নির্মান করা হয়েছিল। শহীদ মিনারে ছাত্রী ও শিক্ষকরা প্রতি বছর ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিল। কিন্তু স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিবাবক ও শিক্ষকদের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ভাল চোখে দেখছিল না স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত ইসলামী চক্রের দোসর পরিবারের সদস্যরা। গত ১৪ আগস্ট বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়া শারমীন মৌসুমি কেকা, আনিসুর রহমান তাপু ও ফতেমা শরীফের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা আরও ১২/১৪ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির ব্যাক্তি শাবল, খোন্তা, কোদাল, হামার, বড় হাতুরী, রড, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ হৈ হুল্লর ও ডাক-চিৎকার, ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করতে করতে সুগন্ধ্যা পৌর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর ঘেরা খেলার মাঠের গেটের তালা ভেঙ্গে অবৈধভাবে স্কুলের কম্পাউন্ডে প্রবেশ শহীদ মিনার ভেঙ্গে মাটির সাথে গুড়িয়ে। স্থানীয় কিছু লোকজন ও কয়েকজন অভিভাবক শহীদ মিনার ভাঙ্গার কারণ জানতে চাইলে ও বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ১ ও ২ নং আসামী পিস্তল ও ৩নং আসামী দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে সকলকে সরে যেতে বাধ্য করে । বাদির আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনার একটি গুরত্বপূর্ন স্থাবর সম্পত্তি । আসামীরা আইনশৃঙ্খলা বিঘœকরিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীকার আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার ভাংচুর করিয়া মারাত্মক অপরাধ সংগঠন করিয়াছে যাহা দ্রুত বিচার আইনে বিচারযোগ্য ।
এসআই হযরত আলী বলেন, আসামী ফতেমা শরীফকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে । প্রয়োজনে রিমান্ড আবেদন করা হবে। উল্লেখ্য ঝালকাঠি নতুন চর এলাকার ইলেক্ট্রিশিয়ান মোঃ নাছির উদ্দিনের স্ত্রী ফতেমা শরীফ।
Leave a Reply